করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ১৮ দফা নির্দেশনা জারি
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়সহ সকল ক্ষেত্রে সব ধরনের জনসমাগম সীমিত করাসহ ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে সরকার।
সোমবার (২৯ মার্চ ২০২১) প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউসের স্বাক্ষরে এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকি নিশ্চিত করেছেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এসব নির্দেশনা অবিলম্বে সারাদেশে কার্যকর হবে এবং আপাতত অন্তত দুই সপ্তাহ বলবৎ থাকবে।
যেসব এলাকা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে, সেসব জায়গায় আন্তঃজেলা যান চলাচল সীমিত করা, প্রয়োজনে বন্ধ রাখার কথা বলা হযেছে নতুন নির্দেশনায়। বিনোদন ও পর্যটনকেন্দ্রে জনসমাগম সীমিত করার পাশাপাশি মেলা বা সামাজিক অনুষ্ঠানে নিরুৎসাহিত করতে বলা হয়েছে।
স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এতদিন বন্ধই ছিল, তার সঙ্গে মাদ্রাসাও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। গণপরিবহন এবং হোটেল-রেস্তোরাঁয় মানুষের সংখ্যা আসন সংখ্যার অর্ধেকের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। আর বিদেশ থেকে আসা সবার ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। নির্দেশনাগুলো হলো-
১. সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়সহ যেকোনো উপলক্ষে জনসমাগম সীমিত করার কথা বলা হয়েছে। প্রয়োজনে উচ্চ সংক্রমণ এলাকায় জনসমাগম নিষিদ্ধ থাকবে।
২. মসজিদসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি পালন নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে।
৩. পর্যটন, বিনোদন কেন্দ্র, সিনেমা হল, থিয়েটার হলে জনসমাগম সীমিত করতে হবে এবং সব ধরনের মেলা আয়োজন নিরুৎসাহিত করা হবে।
৪. গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং ধারণক্ষমতার অর্ধেকের বেশি যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।
৫. সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আন্তজেলা যান চলাচল সীমিত করতে হবে, প্রয়োজনে বন্ধ করতে হবে।
৬. বিদেশফেরত যাত্রীদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে।
৭. নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী খোলা ও উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেচাকেনা করতে হবে।
৮. স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোয় মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।
৯. শপিং মলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা বাধ্যতামূলক।
১০. দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
১১. অপ্রয়োজনে রাত ১০টার পর ঘর থেকে বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
১২. প্রয়োজনে বাইরে গেলে স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মানতে হবে। এ ক্ষেত্রে মাস্ক না পরলে বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৩. করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা করোনার লক্ষণ রয়েছে—এমন ব্যক্তির আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা অন্যদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে।
১৪. জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানা ৫০ শতাংশ লোকবল দিয়ে পরিচালনা করতে হবে। অন্তঃসত্ত্বা, অসুস্থ, ৫৫ বছরের অধিক বয়সী ব্যক্তিদের বাসায় থেকে কাজের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১৫. সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা যথাসম্ভব অনলাইনে আয়োজন করতে হবে।
১৬. সশরীরে উপস্থিত হতে হয়—এমন যেকোনো ধরনের গণপরীক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।
১৭. হোটেল, রেস্তোরাঁয় ধারণক্ষমতার অর্ধেক মানুষ প্রবেশ করতে পারবে।
১৮. কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ ও অবস্থানের পুরোটা সময়ই বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরাসহ সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
সাম্প্রতিক মন্তব্য