সিকিউরিটি গার্ডকে শাবি ছাত্রলীগ নেতার মারধর
শাবি প্রতিনিধি
অসামাজিক কাজে বাধা দেয়ায় দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ডকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসিফ হোসেন রনির বিরুদ্ধে।
গত মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্বদ্যিালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী গার্ড লিটন দেব রেজিস্ট্রার ও প্রক্টর বরাবর একটি অভিযোগপত্র দায়ের করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনা তদন্তে সহকারী প্রক্টর মো. সামিউল ইসলামকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রক্টর জহীর উদ্দিন আহমদ।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সহকারী প্রক্টর আবু হেনা পহিল ও মো. শাকিল ভূঁইয়া। কমিটিকে অতিদ্রæত তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী ঐ গার্ড আসিফ হোসেন রনি বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। তবে অভিযুক্ত রনি বিয়টি অস্বীকার করেছেন।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, গত ৪ ডিসেম্বর গাজী কালুর টিলায় ডিউটিরত অবস্থায় এক যুগলকে আপত্তিকর অবস্থায় পেলে তিনি প্রক্টর অফিসে বিষয়টি অবহিত তাদেরকে সেখানে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ঐ যুগল সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলের শিক্ষার্থী বলে নিজেদেরকে পরিচয় দেয় এবং ক্যাম্পাসে রনি তাদের পরিচিত বলে জানায়। এমতাবস্থায় রনি ঐ গার্ডকে ফোনে তাদেরকে ছেড়ে দেয়ার কথা বলেন। প্রক্টর অফিসে নেয়ার পথে শহীদ মিনারের টিলার পাদদেশে আসলে রনির সাথে তাদের দেখা হয়। এসময় প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাচ্ছে জানার পরপরই রনি ‘প্রক্টরের গুষ্ঠি মারি’ বলেই তার উপর হামলা চালায়। রনি তার কানে জোরে জোরে চড়-তাপ্পড়, মাথায় আঘাত ও বুকে কিল-ঘুষি মারেন। পরে মারধরের কথা প্রক্টরকে জানালে ঐ গার্ডের চাকরী খেয়ে বলবেন বলে হুমকিও প্রদান করেন রনি।
পরে ঐ গার্ড প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদকে অবহিত করেন এবং পরে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেন।
গার্ড লিটন দেব জানান, রনির মারধরের আঘাতে তার কান থেকে পানি পড়ছে এবং তিনি বাম কানে শুনতে পাচ্ছেন না। অন্যদিকে বুকে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষির ফলে তিনি এখনও বুকে ব্যথা অনুভব করছেন।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করে উল্টো গার্ডের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেন আসিফ হোসেন রনি। তিনি বলেন, ঐ গার্ডের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে যা প্রক্টরের কাছে জানালে তার চাকরী চলে যাবে। ছেলে মেয়ে হাত ধরে বসে থাকলে সেটা দেখার দায়িত্ব তার না। তাদের সাথে বাজে ব্যবহার করার কারণে আমি তাকে চড় মারি।
প্রক্টর অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর দ্বারা একজন গার্ডকে মারধরের বিষয়টি অত্যন্ত নিন্দাজনক। ঐ গার্ড যথেষ্ট নিষ্ঠা ও দায়িত্ব নিয়ে গাজী কালুর টিলা এলাকায় অনেকদিন যাবত ডিউটি করছেন। আমি বিষয়টি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবহিত করেছি। উনি দ্রুত তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।’
সাম্প্রতিক মন্তব্য