logo
news image

বড়াইগ্রামে অর্থাভাবে এবারও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি অনিশ্চিত শাকিলের

নিজস্ব প্রতিবেদক, বড়াইগ্রাম নাটোর
নাটোরে বড়াইগ্রামের মেধাবী ছাত্র শাকিলের অর্থাভাবে এবারেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি অনিশ্চিত। গত বছর রংপুর রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েও অর্থাভাবে ভর্তি হতে পারেনি শাকিল আহমেদ। এবার আবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (এ-ইউনিটে মেধা তালিকা-১৯৭),জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (সি-ইউনিটে মেধা তালিকা-১৬১ এবং আই্-ইউনিটে ১০৬) ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে। অন্যের বাড়িতে শ্রমিকের কাজ করে যে টাকা জমা হয়েছিল তা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য যাতায়াত আর ভর্তি ফরম কিনতেই শেষ হয়ে গেছে তার। অর্থ নাই তবু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন দু’চোখে ভরা। উচ্চ শিক্ষিত হয়ে হবে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, দেশ সেবায় নিজেকে করবে উৎস্বর্গ। কিন্তু কিভাবে পুরণ হবে তার সেই স্বপ্ন ? এমন প্রশ্নে নির্বাক মেধাবী শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ। সে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার নগর ইউনিয়নের দোগাছী গ্রামের দরিদ্র শহিদুল ইসলামে ছেলে। 
শাকিলের দাদী সফুরা বেগম এবং স্থাণীয়রা জানান, শাকিলের বয়স যখন সাত মাস তখন পারিবারিক বিরোধে শাকিলকে ফেলে মা সেলিনা বেগম ফিরে যান বাবার বাড়ী। এরপর আর কোন খোঁজ নেন নাই শাকিলের। বাবা শহিদুল ইসলাম এরপর রাশিদা বেগমকে বিয়ে করেন। সৎ মা শুরু থেকেই মেনে নেন নাই শাকিলকে। ফলে তার ঠাঁই হয় দাদী সফুরার ঘরে। দাদী অন্যের বাড়িতে কাজ করে নাতীকে দিনে দিনে বড় করে তুলেন। শাকিলকে ভর্তি করেন স্কুলে। সে মশিন্দা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণী, মেরিগাছা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং খলিশাডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে। হাইস্কুলে ভর্তির পর থেকেই সুযোগ বুঝে এবং ছুটির দিনে অন্যের জমিতে শ্রমিকের কাজ শুরু করে শাকিল । তার এবং দাদীর আয়ে কোন মতে চলে সংসার ও লেখা পড়া। বাড়ীতে থেকে এতোদিন চললেও এবার আর হচ্ছে না শাকিলের লেখা-পড়ার সুযোগ। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েও ভর্তি হওয়া হচ্ছে না তার। 
শাকিল আহমেদ বলেন, ইচ্ছে ছিল ডাক্তার হবো মানব সেবা করবো তাই বিজ্ঞান বিভাগে পড়েছি এসএসসি ও এইচএসসি। অর্থের অনিশ্চয়তা দেখে এবার মানবিক বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছি। যাতে করে লেখা-পড়ার পাশাপশি কাজ করার সুযোগ পাই। তাহলে হয়তো পড়ার খরচটা যোগাড় করে নিতে পারবো। কিন্তু এখন ভর্তির খরচটাই কোনো ভাবেই জোগাড় করতে পারছি না। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই ভর্তি হতে হবে। বিষয়টা ভেবে খুব মন খারাপ হচ্ছে। যদি কোনো সুহৃদয়বান ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসে তাহলে আমি একদিন আলোকিত মানুষ হতে পারবো।
খলিশাডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আনম ফরিদুজ্জামান বলেন, শাকিল খুবই মেধাবী ছাত্র। আমাদের কলেজে পড়ার সময় ফ্রি প্রাইভেট পড়াসহ অন্যান্য সুবিধা দিয়ে সহযোগিতা করেছি। এখন সে ভর্তির সুযোগ পেলে ভাল কিছু করতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। 

সম্পাদনায়-মআকস

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top