logo
news image

মহাসড়ক দাপিয়ে বেরাচ্ছে অবৈধ যানবাহন

আব্দুল কাদের সজল, বড়াইগ্রাম নাটোর
পাবনা-নাটোর মহাসড়ক দাপিয়ে বেরাচ্ছে অবৈধযান সিএনজি ও ব্যাটারী চালিত থ্রি-হুইলার, রিক্সা-ভ্যান, অবৈধ ট্রাক্টর, ভুটভুটি। অবৈধ ট্রাকটরে ইটভাটার জন্য মাটি পরিবহনের ফলে দূর্ঘটনার পাশাপশি নষ্ট হচ্ছে মহাসড়ক। গত বছর ২৬ আগষ্ট মহাসড়কের কদিমচিলান এলাকায় থ্রি-হুইলার-বাস মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৫জন নিহত হয়।  তখন দায়িত্বে অবহেলার দায়ে বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ষ্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়। তখন সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়েছিল এসব যানের চলাচল। তখন প্রায় একমাস কোন ওসি ছিলনা থানায়। এরপর বর্তমান ওসি আব্দুল আলীম সিকদার দায়িত্ব নেন। এরপর আবার উল্টোতে থাকে চিত্র। এখন আহরহই চলছে এসব যানবাহন।
জানা গেছে, মাটি টানার কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর এবং যাত্রীবাহি থ্রী-হুইলার, সিএনজিচালিত থ্রী-হুইলার, ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা -ভ্যান, অটোটেম্পো ও অযান্ত্রিক যানবাহনের মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ করেছে সরকার। কিন্তু সেনিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত  ট্রাক্টরগুলো মাটি নিয়ে নাটোর-পাবনা মহাসড়কের বনপাড়া বাজার, ধানাইদহ ও কমিদচিলানসহ বিভিন্ন এলাকায় অবাধে চলাচল করছে। এসব ট্রাক্টর থেকে নরম ও কাদামাটি পড়ে মহাসড়ক পিচ্ছিল হয়ে যাচ্ছে। 
এছাড়া আহম্মেদপুর থেকে বনপাড়া হয়ে রাজাপুর বাজার পর্যন্ত নিষিদ্ধ ঘোষিত সিএনজিচালিত থ্রী-হুইলার, ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা, রিক্সা-ভ্যান ও অযান্ত্রিক তিন চাকার যানবাহন চলাচল করছে। মহাসড়কে পড়ে থাকা নরম কাদা মাটি এবং লাইসেন্স ও রুটপারমিটবিহীন এসব যানবাহনের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয়রা জানান, মাঝেমধ্যে হাইওয়ে পুলিশ কিছু থ্রী-হুইলার, ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা, রিক্সা-ভ্যান ও অযান্ত্রিক যানবাহন বন্ধে অভিযান চালালেও অজ্ঞাত কারণে মাটি বহনকারী ট্রাক্টর বন্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না। এ ছাড়া থ্রী-হুইলারগুলোও বন্ধ করছে না। ফলে মহাসড়কে নিরাপত্তার ভয়াবহ ঝুঁকি থেকেই গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিএনজি অটোরিক্সা এবং এক ব্যাটারীর ভ্যান চালক জানান, নিয়মিত মাসোহারা দিলে সড়কে গাড়ী চালালে কোন সমস্যা নাই। আর টাকা দিতে দেরি করলে বা অপারগতা জানালেই বা অপরিচিত গাড়ী পেলেই মামলা দেওয়া হয়।
অপর এক ভ্যান চালক বলেন, আমার ভ্যান গাড়ী বনপাড়া বাজার থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে আমি থানায় গিয়ে বলি, ভ্যান বন্ধ থাকলে আমার সংসারে খাবার জুটবে না, ঋণের কিস্তি দিতে পারবো না। এসময় এক পুলিশ বলেন ভ্যান নিতে হলে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে না হলে মামলা দিবো ১ মাস পরে ভ্যান নিয়ে যেও। টাকা দিতে না পারায় মামলা দেওয়া হয়েছে। অথচ আমাদের বলা হয়েছিল বনপাড়া পৌর এলাকায় ভ্যান চালানো যাবে।
সংশ্লিষ্ট ইটভাটা গুলোতে কথা বলে জানা গেছে, তারা হাইওয়ে থানার সাথে নির্দিষ্ট অংকের মাসোহারার বিনিময়ে মহাসড়কে মাটি টানা এবং ইট পরিবহনের কাজে ট্রাক্টর ব্যবহার করতে পারছেন। কোন ভাটার পক্ষ থেকে ওই অংক দিতে দেরি হলেই তার ভাটার গাড়ীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়।
এদিকে গতকাল শুক্রবার সকালে পাবনা-নাটোর মহাসড়কের রাজাপুর মাছ বাজার এলাকায় থ্রী-হুইলার ও অটোভ্যান চালকদের নিয়ে এক সচেতনতা সভা করেন। ওই সভায় স্থাণীয় জন প্রতিনিধি ও চালকরা উপস্থিত ছিলেন।
বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলীম হোসেন শিকদার জানান, মহাসড়কে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কারো সাথে যোগাযোগ বা মাসোহারা নিয়ে গাড়ী চলাচলের অভিযোগ সঠিক নয়।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top