logo
news image

লোডশেডিংয়ে আর তীব্র গরমে অতিষ্ট জনজীবন

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
দেশের সর্বনিম্ন বৃষ্টিপাত ও উষ্ণতম স্থান নাটোরের লালপুরে লোডশেডিংয়ে দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। গরমের উত্তাপ এমন পরিস্থিতিতে কয়েকদিন ধরে বিদ্যুৎ থাকছে না ঘণ্টার পর ঘণ্টা। দিন রাত মিলিয়ে অর্ধেক বা তার বেশি সময় লোডশেডিংয়ে বিদ্যুৎ বন্ধ থাকছে। বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো লোডশেডিং শিডিউল ছাড়াই এ ভোগান্তি হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৬ জুন ২০২৩) লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত দুই দিনে হাসপাতালে ৬০ জন ডায়রিয়া সংক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। শ্বাসকষ্ট জনিত রোগী ভর্তি হয়েছেন ৩ জন। আর অন্যান্য রোগী ৬১ জন।
দক্ষিণ লালপুর গ্রামের রিক্সা চালক বিচ্ছাদ আলী (৭০) বলেন, দুপুর রোদে পেটের দায়ে রিক্সা নিয়ে বেরিয়েছেন। যাত্রী নিয়ে রিক্সায় উঠতেই প্রচন্ড তাপ আর গরমে মাথা ঘুরে যায়। তাই ভবনের নিচে একটু ছায়ায় বসে পড়েছেন। এই খরতাপে জীবন বেরিয়ে যাচ্ছে।
এসএসসি পরীক্ষার্থী ফারিহা খাতুন বলে, বুধবার (৭ জুন) থেকে বিদ্যালয়ে পরীক্ষা শুরু হবে। প্রচন্ড গরম তার ওপর বিদ্যুৎ থাকছে না অধিকাংশ সময়। এতে পড়াশুনার করা যাচ্ছে না। এতে অনেক ক্ষতি হচ্ছে।
দিনমজুর জিন্নাত আলী (৫৯) বলেন, সারাদিন কাজ করে ক্লান্ত থাকেন। কারেন্ট না থাকায় রাতে ঘুমাতে পারছেন না। ঘুম না হওয়ায় দিনের বেলা কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
গৃহীনি আফরোজা বেগম (৫৭) বলেন, দিনরাতে ঘন্টায় ঘন্টায় বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যহত হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ে কোন কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
ওয়েল্ডিং ব্যবসায়ী মাজদার রহমান (২৮) বলেন, ঘন্টায় ঘন্টায় কারেন্ট যাওয়ায় কোন অর্ডার ঠিক সময়ে ডেলিভারি দিতে পারছেন না। আগের তুলনায় বেশি বিদ্যুৎ বিল গুনতে হচ্ছে। সে তুলনায় সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।  
নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ লালপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. রেজাউল করিম বলেন, হঠাৎ করে বিদ্যুতের লোড বেড়ে গেছে। গরমের কারণে বাসা বাড়ি, মার্কেট, অফিসে এসির ব্যবহার বেড়ে গেছে। ১৯ কিলোওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে অর্ধেকের কম সরবরাহ পাচ্ছেন। আওতাধীন ৮টি ফিডারের মধ্যে চারটি করে প্রতি ঘন্টায় লোডশেডিং করা হচ্ছে। তবে যত কম সময় লোডশেডিং করা যায় সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।
লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এ কে এম শাহাব উদ্দিন তীব্র গরমে সূর্যের আলো এড়িয়ে চলা, ছাতা ব্যবহার করা, বেশি করে পানি পান করা, সূতির কাপড় পরা, খোলামেলা জুতা পরা, ভারী ও ফাস্টফুড এড়িয়ে চলা, বাসী খাবার না খাওয়া, ঘরে পানি ভর্তি বালতি রাখা, প্রতিদিন গোসল করা ও হিট স্ট্রোকের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, প্রচণ্ড গরমে শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে তাপমাত্রা বেড়ে গেলে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারে। ফলে মাংসপেশি ব্যথা, দুর্বল লাগা ও প্রচণ্ড পিপাসা হওয়া, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, মাথাব্যথা, ঝিমঝিম করা, বমিভাব ইত্যাদি লক্ষণ দেখা গেলে প্রেশার পরীক্ষা করে দেখতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top