logo
news image

গ্রিন ভ্যালি পার্কে এতিম শিশুদের আনন্দ ভ্রমণ

ইমাম হাসান মুক্তি, লালপুর (নাটোর)
নাটোরের লালপুরে গ্রিন ভ্যালি পার্কে এতিম শিশুরা আনন্দ ভ্রমণে উৎসব মুখর দিন কাটিয়েছে।
মঙ্গলবার (১ মার্চ ২০২২) নাটোরের দিঘাপতিয়া বালিকা শিশুসদনের ৫৩ এতিম শিশু আনন্দঘন দিনটি উপভোগ করে।
দিঘাপতিয়া বালিকা শিশুসদনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সকালে শিশুরা প্রস্তুত হয়ে থাকে। আটটায় শিশুসদনের ফটকে পৌঁছে যায়
শিশুরা নতুন পোশাক পরে নাটোর জেলা কালেক্টরেট স্কুলের দুটি বাসে লালপুরের গ্রিন ভ্যালি পার্কের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। শিশুদের অভিভাবকের দায়িত্বে ছিলেন, চিকিৎসক আবুল কালাম আজাদ, অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক, অবসরপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা মনিমুল হক ও শিশুসদনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুল।
শিশুরা পার্কে পৌঁছালে অভ্যর্থনা জানান লালপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইসাহাক আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা সুলতানা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাম্মী আক্তার ও পার্কের পরিচালক (প্রশাসন) সামসুজ্জোহা।
পার্কে প্রবেশের পর ইউএনও শিশুদের জন্য নাশতার আয়োজন করেন। দুপুরে খাবার নিজে হাতে পরিবেশন করেন।
দিঘাপতিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া জানায়, পার্কে ঘুরতে পেয়ে খুব মজা লাগছে।
নাটোর পিএন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ফারহানা জানায়, জীবনের প্রথম এত আনন্দ উভোগ করতে পেরে খুব খুশি লাগছে। ওই বিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী মেঘলা বলে, সে নিজে কবিতা লেখার চর্চা করে। পার্কের সৌন্দর্য দেখে মন ভরে গেছে।
দিঘাপতিয়া এম কে কলেজের অনার্সের শিক্ষার্থী দোলেনা ও মৌসুমী জানায়, শিশুসদনে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও বাইরে ঘুরতে যাওয়ার সৌভাগ্য কখনো হয়নি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনেক মজা হয়েছে। এ আনন্দ কোনো দিন ভুলবো না।
পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নুরীয়া পারভীন বলেন, কোমলমতি এতিম শিশুদের জন্য বিনা মূল্যে প্রবেশাধিকারসহ চারটি রাইড উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। তাদের বিশ্রামের ব্যবস্থাও রয়েছে। মানব সেবার ব্রত নিয়ে প্রতিষ্ঠিত পার্কের লভ্যাংশের সিংহভাগ সমাজকল্যাণ মূলক কর্মকান্ডে ব্যয় করা হয়ে থাকে। এখানে আন্তর্জাতিক মানের বিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়, শিশু পরিবার, বৃদ্ধাশ্রম ও হাসপাতাল প্রভৃতি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে।
শিশুসদনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুল বলেন, বর্তমান প্রতিষ্ঠানটিতে ৫৩ জন এতিম শিশু রয়েছে। এদের দিঘাপতিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, পিএন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও দিঘাপতিয়া এম কে কলেজে পড়াশুনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শিশুদের সঙ্গে আসা অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শিশুসদনের এতগুলো মেয়েকে নিয়ে ভ্রমনের আয়োজন করা কঠিন ছিল। জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় স্থানীয় প্রশাসন ও পার্ক কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠু পরিবেশে শিশুদের আনন্দ উপভোগের সব ব্যবস্থা করায় কৃতজ্ঞ।
ইউএনও শামীমা সুলতানা বলেন, এতিম শিশুদের সাথে সময় কাটাতে পেরে মনটা ভরে গেছে। কিছু সময়ের জন্য তাদের মা হওয়ার সুযোগ পাওয়ায় নিজেকে ধন্য মনে হচ্ছে।
নাটোর জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও শিশুসদনের সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, এতিম সন্তানরা গ্রিন ভ্যালি পার্ক দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করে। ওদের ইচ্ছা পূরণ করতে পেরে খুশি। তাদের সহযোগিতায় সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top