লালপুরে কাঠের চাকা শিল্প বিলুপ্তির পথে
নিজস্ব প্রতিবেদক, লালপুর (নাটোর)। ।
যেদিকেই যাই, কানে বাজে একই ধরনের শব্দ, খট-খট, খট-খট। হ্যাঁ এ শব্দ আর কিছু নয়। নিঃস্বন্দেহে কাঠ কাটার শব্দ। সে বহু বছর আগের কথা। এই পরিবেশ যে এলাকায় তার নাম গৌরীপুর। নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার গৌরীপুর এমন একটি জনপদ যেখানে এই শব্দ মুখর করে রাখতো সমগ্র এলাকাবাসীকে। ঘরে ঘরে তৈরী হতো কাঠের চাকা। আর এখন সেই প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা গৌরীপুরে শুধুই নিস্তব্ধতা।
অধুনিকতার ছোঁয়ায় গড়ে ওঠা যান্ত্রিক জীবন ব্যবস্থার প্রসারে এবং চাহিদা কম থাকায় উত্তরাঞ্চলের ঐতিহ্য এই চাকাশিল্প আজ বিলুপ্তই বলা যায়। ন্যায মূল্য না পাওয়ার জন্য বাপ-দাদার ব্যবসা এই চাকা তৈরীর কাজ বাদ দিয়ে বিভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়ছে কারীগর মহাজনসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই। উপজেলার গৌরীপুর ও পালিদেহায় চাকা তৈরীর সময় খট-খট শব্দে এবং ক্রেতা-বিক্রেতার আনাগোনায় মুখরিত হয়ে থাকতো এই জনপদ।
এই এলাকার তৈরী চাকার কদর ছিল ভৈরব, গাজীপুর, সিলেট ও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। গরু, মহিষ ও ঘোড়ার গাড়ীতে ব্যাবহার হতো এই ধরনের কাঠের তৈরী চাকা। কিন্তু এসব গ্রামীন বাহন আজকাল তমন চোখেই পড়েনা। গৌরীপুরের চাকা তৈরীর কারিগর ও ব্যবসায়ীরা জানান. আজ খেকে ২০ বছর আগে এই এলাকায় ১৫০ টার অধিক চাকা তৈরীর কারাখানা ছিলো। বর্তমানে এই ঐতিহ্যবাহী ব্যবসা ধরে রেখেছেন মাত্র ৮ থেকে ১০ জন। এই ৮/১০ জনের কারখানাও চলছে কোনরকমে। কাঠসহ চাকা তৈরীর বিভিন্ন সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি হওয়ার জন্য এবং আগেরমত চাকার চাহিদা না থাকায় বেশির ভাগ চাকা তৈরীর কারখানা গুলি বন্ধ হয়ে গেছে।
সাম্প্রতিক মন্তব্য