এমন একটা অসহায় পৃথিবীর কথা কেউ কি আগে ভেবেছেন? শহরের রাজপথে গাড়ি নেই, মার্কেটে মানুষ নেই। বন্দরে ক্রেনের শব্দ নেই, রেলপথে ঘড় ঘড় করে যন্ত্রশকটের চাকা ঘুরছে না। কলকারখানায় তালাবন্ধ দৈত্যাকার মেশিনের সব ইউনিট। সব নিঝুম। নিরিবিলি, শুনশান। সুযোগ নিয়ে রাজপথের নিয়ন বাতির উজ্জল ঝলমলে আলোয় ঘুড়ে বেড়াচ্ছে বন্য প্রাণির দল!...
করোনা নিজে এক অদৃশ্য দানব। এই দানবের চরিত্র বহুরূপী, এর সৈন্যসংখ্যা অজানা, যারা সব দেশের সবাইকে একসংগে গুলি করতে ক্ষমতাবান। বাংলাদেশে এখন চতুর্থ পর্যায়ে এসে ডাক্তার, পুলিশ, জনতাসহ চারদিকে করোনার সমষ্টি সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। পাশাপাশি সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পেয়ে প্রতারক ও ঠগবাজদের প্রাধান্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। করোনার আক্রমণের ফলে আমরা মানবরুপী ঠগ-বাটপার দানবদেরকেও দেখার দুর্ভাগ্যের মধ্যে পড়েছি। এই করোনা-কঠিন দ্বিবিধ বিপদের সময়ের মাঝে এবার আমরা রমজানের রোজা পালন করছি। এখন ঠগ সমষ্টিকে রূখতে হবে আবার করোনার সামাজিক সংক্রমণও ঠেকাতে হবে। ...
শুধু আমি একা নই, আমার মত সারাদেশে স্বীকৃতি প্রাপ্ত বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে ৬২টির মতো। আর স্বীকৃতি না পাওয়া বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে আরও ১২০০টি। এতে মোট শিক্ষক-পেশাজীবি রয়েছে-১৭ হাজার ৬৬৮জন এবং কর্মচারী রয়েছে-এক হাজার ৩৮৫২জন মোট- প্রায় ২৮ হাজার ৫৫০জন শিক্ষক-কর্মচারী আজ মানবেতর জীবন যাপন করছে।...
নৃবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে সাধারণ কথায় আচরণ বলতে যা জানতে পেরেছি তা হল একজন মানুষ সামাজিক নিয়মে আরেক জন মানুষের সাথে যে ভাবে কথপকথন করে বা কোন নিদিষ্ট বিষয়ের প্রতি সাড়া প্রদান করে তাকে আচরণ বলা হয়। আর আচরণ পরিবর্তন বলতে কোন নিদিষ্ট পরিস্থিতিতে মানুষ নিজেকে মানিয়ে নেওয়া বা খাপ খাওয়ানোর জন্য যে ধরনের সাড়া প্রদান করে তাকে বুঝানো হয়। মানুষের আচরণ পরিবর্তন একটি কঠিন ও দুরুহ কাজ।...
জনপ্রতিনিধিগণ ভোটে জিতে ক্ষমতা লাভ করেছেন। জনসেবা এখন তাঁদের মহান ব্রত হওয়া উচিত। করোনার ক্রাান্তিকালে জনপ্রতিনিধিগণের জনসেবা দেয়ার পরীক্ষা শুরু হয়েছে। বহুদিন ধরে অনেকগুলো পরীক্ষা দিতে হবে। প্রথম পরীক্ষা দিতে গিয়ে অনেক অসৎ জনপ্রতিনিধি ত্রাণ চুরির দায়ে বহি:স্কৃত তথা বরখাস্ত হয়েছেন।...
শুধু স্পর্শ ও নিরাপদ দৈহিক দূরত্ব না মানার কারণে সারাবিশ্বে দাবানলের মত ছড়াচ্ছে ভয়ংকর করোনা ভাইরাস। এ্টা রোগাক্রান্ত বিশ্বের সব মানুষকে খুন করতে চায়। এজন্য মানব সভ্যতা আজ শঙ্কিত ও ব্যতিব্যস্ত। কোভিড-১৯ বিশ্বের মানুষকে মৃত্যুভয় দেখিয়ে ঘরে বন্দী করে ফেলেছে। ছোট-বড় সবাই আজ গৃহকোণে কালাতিপাত করতে বাধ্য হচ্ছে।...
আরো একটি নতুন বাংলা সাল শুরু হয়ে গেল। কিন্তু করোনার ভয়ে বৈশাখী মেলায় যাওয়া হলো না। আমরা সবাই একটা কঠিন সময়ের সাথে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ঘরে বসে যুদ্ধ করে চলেছি। কারণ এই ফুলে ভরা এপ্রিল- ঘ্রাণে ভরা এপ্রিলে বিশ^বাড়িটার কোথায় নেই করোনার আগ্রাসন?...
করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশে এখন চলছে সাধারণ ছুটি। যদিও প্রয়োজন ছিল আমাদের লকডাউন। ‘লকডাউন’ শব্দটি ইংরেজি হলেও এর মর্মার্থ বুঝতে আমাদের অসুবিধা হয় না। সরকার কাগজে কলমে ‘লকডাউন’ না বললেও কার্যত সব বন্ধ করা হয়েছে। আর তাতে লকডাউনের সব আয়োজন সম্পন্ন হছে। আর সেজন্য করোনার চিকিৎসা ও রোগ নির্ণয় থেকে বেশি জোর দেয়া হচ্ছে ত্রাণ কার্যক্রমের ওপর। কিন্তু সারাদেশে লোকজনের চলাচল দেখলে মনে হয় না আমরা লকডাউনে আছি। ...
করোনা সংক্রমণের চতুর্থ পর্যায়ের মুখোমুখি অনেক দেশ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অন্য কোন সময় কোন সংকটে একসাথে গোটা দুনিয়ার মানুষকে এত বিচলিত হতে দেখা যায়নি। মৃত্যুভয় এতটা জেঁকে বসেছে যে সামান্য বিষয়ে মানুষ খুব অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। চারদিকে শুধু অনিশ্চয়তা। নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে ধৈর্য্যরে বাঁধ আর যেন টান সইছে না। তারা জীবনের তাগিদে ঘরের বাইরে যেতে কারো বাধাকে পাত্তা দিচ্ছে না। কখনো একা কখনো দল বেঁধে সাহায্যের জন্য বাইরে ঘোরাঘুরি করে চলেছে।...
করোনা সংক্রমণ নতুন হলেও এর চেয়ে বড় বড় মহামারীর আক্রমণ বিশ^মানবতাকে আগেও বিপদের মুখোমুখি করেছিল। রোগ-শোকে প্রাকৃতিকভাবে প্রলয়ঙ্কারী মানবনিধন ঘটনা নতুন কিছু নয়। গত তিনশ বছরে চারটি বড় বড় মহামারী এই বিশ^বাড়িটাকে আক্রমণ করেছে। কথা হলো, শতাব্দীর বিশসাল এলেই পৃথিবীটা এমন অশান্ত হয়ে উঠে কেন? এরূপ নিত্যনতুন জীবনসংহারী মহামারীর ভয়ঙ্কর থাবায় মানুষগুলো ছিন্নভিন্ন হয় কেন? ...