logo
news image

দুই গ্রামের ৭ হাজার মানুষ পাবেন বিশুদ্ধ পানি

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
নাটোরের লালপুরের জোতদৈবকী ও বুধপাড়া গ্রামের ৯০ ভাগ বাসিন্দা দীর্ঘদিন থেকে মাত্রাতিরিক্ত আয়রন যুক্ত পানি ব্যবহার করে আসছেন। যার ফলে তাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন বিভিন্ন রোগ বালাইয়ে। এতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসপত্র ও মূল্যবান সামগ্রী। এই দুই গ্রামের প্রায় ৭ হাজার মানুষের নিরাপদ ও আয়রনমুক্ত বিশুদ্ধ সুপেয় পানি সরবরাহে রুরাল পাইপড ওয়াটার সাপ্লাই স্কীম প্রজেক্টের আওতায় প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সরকারের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
জানা যায়, বুধপাড়ার দীপাবলী উৎসব উপলক্ষে ১৮৬৯ সালে নাটোরে ব্যাপক হারে কলেরাসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। যার ফলে পুঠিয়ার রাণী শরৎ সুন্দরী ১৮৬৭ সালে লালপুরে প্রথম একটি দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তা চালু ছিল। পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালে ৩১ শয্যার লালপুর থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থাপন করা হয়।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পাইপ লাইনের মাধ্যমে দুই গ্রামের প্রতিটি পরিবারে সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য ৩ কিলোমিটার পাইপ লাইন নির্মাণে প্রায় ২ কোটি টাকার প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে। ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে গৃহীত প্রকল্পে ইতোমধ্যে সয়েল্ট টেস্ট করে টিউবয়েলের পানিতে আর্সেনিক, আয়রন, ক্লোরাইড ও পানির গুনগতমান পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (২ নভেম্বর ২০২২) সরেজমিন দেখা যায়, প্রকল্প এলাকায় সয়েল্ট টেস্ট শেষে টিউবয়েলের পাইপ বসানো হয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ভিএস শ্রমিক শওকত আলী বলেন, দ্রুত প্রকল্পের আনুসঙ্গিক কার্যক্রম শুরু করা হবে।
লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ড সদস্য এমদাদুল হক বলেন, জোতদৈবকী ও বুধপাড়া গ্রামে সুপেয় ও নিরাপদ পানির সমস্যা অনেক পুরাতন। গ্রামের দীর্ঘদিন আয়রন যুক্ত পানি পান করে আসছেন। নতুন এই পানির প্লান্ট স্থাপন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে রোগমুক্ত সুস্থ্য জীবন যাপন সম্ভব হবে। তাঁর এলাকায় এ ধরণের প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রবিন আহমেদ বলেন, নিরাপদ ও আয়রনমুক্ত সুপেয় পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় ১৮ শতাংশ জমিতে দুইটি স্থানে ১ লাখ লিটার পানির ট্যাংকিসহ ৩ কিলোমিটার পাইপ লাইন স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলেছে। এই প্লান্টে দুইটা প্রডাকশন টিউবয়েলের মাধ্যমে ঘন্টায় ৩ লাখ লিটার নিরাপদ পানি উত্তোলন করে দুই গ্রামের ৭ হাজার মানুষের বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সংযোগ দিয়ে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হবে। আগামী ২০২৩ সালের জুন মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কার্যক্রম শুরুর পর ২ বছর পাম্প মেরামত ও  ১৮ মাস পাম্প চালকের বেতন বাবদ খরচ বহন করবে।
নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, জনস্বাস্থ্য হুমকি থেকে জনসাধারণকে রক্ষা করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে সুপেয় ও নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প হাতে নিয়েছে লালপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ বিশুদ্ধ পানীয় জলসহ পানিবাহিত রোগমুক্ত জীবনের নিশ্চয়তা পাবে।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top