logo
news image

রাঙ্গামাটিতে পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে কলাবাগান ঝরণা

প্রাপ্তি প্রসঙ্গ ডেস্ক।।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি। পুরো জেলাটি জুড়ে রয়েছে পর্যটকদের জন্য পর্যটন স্পট ও মিঠা পানির কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদ। হ্রদের পাশে ঠাই দাঁড়িয়ে আছে সুউচ্চ পাহাড়। হ্রদ পাহাড়ের মিতালী শহরে সবুজ অরণ্যর গহীণ পাহাড়ে কয়েকটি ঝরণার সন্ধান মিলে। তার মধ্যে রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের কলাবাগান ঝরণাটি অন্যতম। স্থানীয়দের কাছে এটি ‘কলাবাগান’ ঝরণা নামে বেশ পরিচিতি। প্রতিদিন গড়ে ৩০০জনের মতো পর্যটকের সমাগম ঘটে এখানে।
দিন দিন ঝরণাটি এখন স্থানীয় পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে জেলার বাইরে বিভিন্ন দূর দূরান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটে আসছে দূর্গম এলাকায় অবস্থিত ঝরণাটি অবগাহন করতে।
তবে সাবধান, ঝরণাটি দেখতে আপনাকে বেশ বেগ পেতে হবে। মূল সড়ক থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পায়ে হেঁটে আপনাকে কঠিন পথ মারিয়ে তবেই কাঙ্খিত ঝরণার কাছে পৌছাতে হবে।
ঝরণার কাছে পৌছানোর আগে পাহাড়ি ঝিরি (ছড়া) মারানোর সময় সবুজ গাছপালা, দূর্গম পাহাড়, পাখির কিচিমিচি এবং ঝিরির মাঝে সাদা নুড়ি পাথর আপনার মনকে মাতিয়ে তুলবে। তবে হাটার সময় সাবধান থাকতে হবে। কেননা পাথরের মধ্যে শেওলা জমে থাকে। তাই যে কোন সময় শেওলার আস্তরে পিছলে পড়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন। এজন্য অভিজ্ঞদের সাথে নিয়ে পথ চলা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
হাটার সময় পথিমধ্যে ছোট দু’টি ঝরণা চোখে পড়বে। ক্লান্তি দূর করতে প্রশান্তির ছোঁয়া পেতে কিছুক্ষণ গা ভিজিয়ে নিতে পারেন। এরপর লক্ষ্য সুউচ্চ স্থানে অবস্থিত বড় ঝরণাটির দিকে। শত বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে বড় ঝরণাটি দেখার পর আপনার সকল কøান্তি দূর হয়ে যাবে। এইবার মেতে উঠুন তারুণ্যের জোয়ারে।
ঝরণার শো শো শব্দের গানের সাথে হারিয়ে যান স্বপ্ন বিলাসী মন নিয়ে। হ্যা বলে রাখা ভাল, বিকেলের মধ্যে ঝরণার স্থল ত্যাগ করতে হবে। কেননা এখানে পর্যটকদের নিরাপত্তার কোন ব্যবস্থা নেই।
আনন্দের সাথে মুখরোচক কিছু খেতে চাইলে নিজের সঙ্গে নিয়ে যাবেন। সেখানে পর্যটকদের রুচির স্বাদ নিতে কোন স্টল বসেনি। তবে দু’একজন ব্যক্তি উদ্যোগে স্বল্প পরিসরে ঝালমুড়ি এবং পেয়ারা বিক্রি করে। চাইলে কিনে খেতে পারেন সেইসব খাবার।
সরেজমিনে গেলে পর্যটকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, একদিকে ঝুঁকিপূর্ণ দূর্গম পথ অন্যদিকে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের ভয়, আনন্দ আবার বেদনা হয়ে যেতে পারে। তাই যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, নিরাপত্তা জোরদার ব্যবস্থা গ্রহণ, সৌন্দর্যবর্ধন, বিশ্রামাগার এবং খাবারের জন্য কয়েকটি রেস্টুরেন্ট তৈরি করা গেলে এ এলাকাটি হবে পর্যটন সমৃদ্ধ। সরকার পাবে রাজস্ব। বেকার যুবদের জন্য সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থানের ।
চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা রহমত উল্লাহ খান জানান, আমরা একঝাঁক বন্ধু সিএনজি নিয়ে অপরূপা ঝরণাটি দেখতে এসেছি। পাহাড়ি পথ মারানোর কোন অভ্যাস আমাদের নেই। তবুও মনের প্রশান্তি নিতে ঝুঁকি নিয়ে এখানে ছুটে এসেছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানান, সবকিছু ভাল লাগলেও এখানে মূল সমস্যা হলো নিরাপত্তার অভাব। নিরাপত্তা জোরদার করা গেলে পর্যটকদের ঢল নামবে বলে যোগ করে তিনি।
চট্টগ্রামের রাণিরহাট এলাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক আহসান শামীম বলেন, আসার সময় যত কষ্ট পেয়েছি। এখানে আসার পর সব ভুলে গেছি। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, বিশ্রামাগার এবং কয়েকটি খাবারের দোকান থাকলে এ এলাকাটি নতুন পর্যটন নগরী হিসেবে আলাদা সুখ্যাতি অর্জন করবে।
কিভাবে যাবেন:
রাঙ্গামাটি শহরে থেকে অটোরিকসা (সিএনজি) ভাড়া করে সোজা চলে যাবেন কলাবাগান নামক এলাকায়। যেকোন অটোরিকসা চালককে বললে নিয়ে যাবে। এজন্য পুরো অটো ভাড়া গুণতে হবে ২৫০টাকা।এরপর ছোট্ট গ্রামের মেঠো পথ পাড়ি দিয়ে পাহাড়ি ঝিরি মারিয়ে চলে যাবেন অপরূপা ঝরণার কাছে।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top