প্রথম ভোটে নতুন দিনের স্বপ্ন
প্রাপ্তি প্রসঙ্গ ডেস্ক। ।
যুগ যুগ ধরে তরুণরাই দেশের হাল ধরছে। তরুণ সমাজের দিকে তাকিয়ে আছে বাংলাদেশ; স্বপ্ন বুনছে দেশের মানুষ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রায় ২২ শতাংশ ভোটারের বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। নতুন ভোট দেবেন প্রায় ১ কোটি ২৩ লাখ তরুণ ভোটার। আসন্ন একুশে ফেব্রুয়ারির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে দেশের একুশটি বিদ্যাপীঠের একুশ জন তরুণ শিক্ষার্থীর মতামত তুলে ধরেছেন- নাজিমুল হক সানি।
মহিবুর রহমান সজল
রসায়ন বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
তারুণ্যের প্রথম ভোট অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে হওয়া উচিত। যারা এদেশের স্বাধীনতা চায়নি তাদেরকে বর্জন করা উচিত। নতুন ভোটারদের একমাত্র চাওয়া দেশের উন্নয়ন এবং শান্তি। তারুণ্যের ভোট দুর্নীতি আর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে হোক। প্রত্যেক সরকারেরই উচিত শিক্ষাখাতে বেশি অর্থ বিনিয়োগ করা এবং প্রতিটা ভার্সিটিতে গবেষণা কেন্দ্র নির্মাণ করা। শিক্ষাখাতে ভালো বিনিয়োগ করলে দেশ গবেষণা খাতে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ সম্রাট
ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
তরুণ ভোটার হিসেবে আমি চাইব একটি সুষ্ঠু নির্বাচন; যেখানে হানাহানি-রক্তারক্তি থাকবে না। চাইব মানুষ নির্দ্বিধায় ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিক এবং সৎ, নিষ্ঠাবান ও যোগ্য মানুষকে নির্বাচিত করুক। তবে অবশ্যই তাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণপূর্বক একজন অসাম্প্রদায়িক মানুষ হতে হবে। আমার কাছে ব্যক্তিস্বার্থের চেয়ে দেশের স্বার্থ অনেক বড়।
আশিকুর রহমান
এ্যানিমেল হাজবেন্ড্রী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনের লক্ষ্যে একজন তরুণ ভোটার হিসেবে, নির্বাচন সুষ্ঠু এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পূর্ণ তৎপরতাই আমার কাম্য।
সাদিয়া তুল ফারজানা
ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য,আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি; তবে নির্বাচন আমার কাছে একটি যুদ্ধের মত। অপশক্তিকে দূর করে দেশ-মায়ের এক যোগ্য অভিভাবক নির্ণয়ের যুদ্ধ। আর আমরা সবাই এই যুদ্ধের যোদ্ধা। জীবনের প্রথম ভোটটা তাই এমন কাউকে দিতে চাই যে শক্তহাতে বৈঠা ধরে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে। শুধু প্রতিশ্রুতি প্রদান নয়; বাস্তবায়ন করে দেখাবে।
ফাহিম প্লাবন
পরিসংখ্যান বিভাগ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচনে দেশের রাজনীতিতে গণতন্ত্রের যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছিল; তার অনেকাংশ পূরণ হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে। তবে নির্বাচনকে ঘিরে বরাবরের মত এবারো আশেপাশে ছেয়ে আছে রাজনৈতিক অস্থিরতার কুয়াশা। প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির কুৎসা চর্চার খবরে ছেয়ে যাচ্ছে সংবাদমাধ্যমগুলো। গণতান্ত্রিক এই দেশে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে, আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগের মাধ্যমে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করার দায়িত্বে ন্যাস্ত থাকা নির্বাচন কমিশনের দিকে নজর থাকবে আমিসহ ৭ কোটি তরুণ চোখের।
আমিনুল ইসলাম তপু
ম্যাকানিকাল এন্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং, আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
সরকার বা নির্বাচন কমিশনের উচিত, নাগরিকরা যাতে তাদের ভোট প্রদানের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয় সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া। যাতে রাজনীতির ফাঁদে পড়ে কারো রাজনৈতিক অধিকার হরণ না হয়। আর আমার মতে সকল নাগরিকের উচিত ব্যক্তি বা প্রতীক বিবেচনা না করে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে ভোট প্রদান করা, যাতে দেশের প্রকৃত উন্নয়ন হয়।
নাজমুস সাকিব
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)
আমি একজন তরুণ ভোটার। তবে ভোট দেয়ার সময় আমি প্রার্থীর বয়স কিংবা পরিবার দেখে ভোট দিতে রাজি নই। বিশ্বায়নের এই যুগে প্রার্থী প্রযুক্তি বিষয়ে কতটা দক্ষ, নিজ কর্মক্ষেত্রে সে কতটা সৎ সেটাই আমার ভোটে বেশি প্রভাব ফেলবে এবং অবশ্যই, আইনের শাসনকে আমি স্থাপত্য বিষয়ক উন্নয়নের চেয়ে প্রাধান্য দেব।
কুতুবুদ্দীন ইসলাম
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)
নতুন কিংবা পুরনো যে প্রার্থীকেই ভোট দিননা কেন, ভোট হতে হবে পরিবর্তনের প্রত্যয়ে। এই পরিবর্তন হতে হবে সমাজের, পরিবর্তন হতে হবে দেশের। ব্যক্তিস্বার্থ বাদ দিয়ে সমাজের কল্যাণে দেশের জন্য কাজ করার প্রতি যার ঝোঁক তাকেই প্রয়োজন।
মাহিদুল তন্ময়
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ
নির্বাচনী আবহটা ভালোই লাগছে। একটা উৎসবমুখর পরিবেশ চারপাশে। ভেবে বেশ ভালো লাগছে প্রথমবারের মতো ভোট দিব, প্রতিনিধি বাছাইয়ে সরাসরি অংশগ্রহণ করব। এখনকার তরুণেরা রাজনৈতিকভাবে অনেক সচেতন। আশা করি যোগ্য প্রার্থী এবং দল জয় লাভ করবে।
আবিদ হাসান জয়
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ফজলে নূর তাপস, শেখ তন্ময় ও জুনায়েদ আহমেদ পলকদের মতো তরুণদের রাজনীতিতে দেখতে চাই। রাজনীতিকে ব্যবসায়ীদের প্রভাবমুক্ত দেখতে চাই। আর চাই সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যাদের দেখতে চায় তারাই যেনো ক্ষমতায় আসে। দলগুলোর জনসম্পৃক্ততা যেন আরো বৃদ্ধি পায় এবং সেটা যেনো শুধু নির্বাচনের সময় না হয়ে সারা বছরই অব্যহত থাকে।
ইসরাত কুইন
শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ
বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরিপূর্ণ শিক্ষিত মানুষের অংশগ্রহণ করা উচিত। এদেশের রাজনীতির অবস্থা যেমনই হোক না কেন, তবুও আমি আশা রাখি পরিপূর্ণ শিক্ষিত মানুষ বিজয়ী হয়ে এদেশের হাল ধরবে। ধর্মকে রাজনীতির সাথে যুক্ত করে কোন বিকৃত ঘটনা যাতে না ঘটে। জোর করে ভোট দেওয়ানো, ব্যালট পেপার চুরি করার মতো ঘটনা যাতে না ঘটে, এই প্রত্যাশা করি।
সালমা সাহারা রিজোয়ানা
পরিসংখ্যান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ও সকল উন্নয়নকে বাস্তবায়ন করার জন্য সুযোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের পথই হচ্ছে এই নির্বাচন। তাই দেশ ও জাতির উন্নতির জন্য যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনের মাধ্যমে সকল তরুণ ভোটারদের উচিত সুযোগ্য প্রার্থীকে বাছাই করা।
মানসূরা এলাহী মনীষা
আই ই আর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
আমি একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের নাগরিক। একজন সুনাগরিক হিসেবে আমি অবশ্যই ভোট কেন্দ্রে যাব এবং ভোট দিব। প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়ে আমি খুবই উচ্ছসিত। সৎ এবং যোগ্য ব্যক্তিকেই আমি আমার ভোটটি দিব।
আল ইমরান অপু
বগুড়া মেডিকেল কলেজ
আমি আগামী নির্বাচনের একজন তরুণ ভোটার, আমার প্রথম ভোটদান। কিন্তু সমস্যা হলো, আমি আজ এমন এক জেনারেশনে বড় হয়েছি; যেখানে অনেক ছেলে-মেয়ে বুঝে কিংবা না বুঝেই অনেক বলে ওঠে। তরুণ ভোটার হিসেবে তাই আমার চাওয়া একটাই, রাজনীতিকে ঘৃণা করে নয়; বরং আপনার-আমার মূল্যবান ভোটে চলুন এমনভাবে রাজনীতিকে গড়ে তুলি যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম রাজনীতিকে ভালোবাসতে শিখে। ভালোবেসে রাজনীতির মাধ্যমেই উপহার দিতে পারে এক সুন্দর দেশ, সোনার বাংলাদেশ।
সিফাত মুত্তাকীম
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
এতোদিন ভোটার ছিলাম না বলে দ্বায়িত্বও ছিলনা। তবে এখন অনেকটা দ্বায়িত্ব কাঁধে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য আমি বদ্ধপরিকর। তাই আমি কোন দলের প্রতি অন্ধ হয়ে ভোট বিক্রি করতে চাইনা। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব।
ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুল হাসান (পুলক)
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ
তরুণ ভোটার এবং বাংলাদেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে এই চাওয়া- নির্বাচন যেন ফেয়ার হোক এবং ক্ষমতায় যেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলই আসুক! একজন তরুন ভোটার হিসেবে মাশরাফি বিন মর্তুজা ও শেখ তন্ময়দের রাজনীতিতে প্রবেশকে সাধুবাদ জানাই। আশা করি, উনাদের রাজনীতিতে প্রবেশ বাংলাদেশের জন্যে এক নতুন দিগন্তের হবে এবং উনাদের হাত ধরেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।
গোলাম ওয়াদুদ ভিভিড
জার্নালিজম, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
জনগণের প্রতিনিধি বাছাইয়ের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া হচ্ছে নির্বাচন। তাই সামনের নির্বাচনে যেন জনগণ তাদের ভোট সঠিকভাবে দিতে পারে, যেন তাদের ভোটাধিকার হরণ না হয়; সে দিকে নির্বাচন কমিশনকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আর নির্বাচনে যে দলই জয় লাভ করুক না কেন তারা যেন চিন্তা, বিবেকের স্বাধীনতা ও বাক স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। নতুন প্রজন্ম চায় একটি সোনার বাংলা যেখানে থাকবে সুখ, শান্তি ও জবাবদিহিতা।
মাহফুজা হক মিম
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
আসন্ন এই নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের আগ্রহই তুলনামূলকভাবে বেশি। ভাবতেই ভালো লাগছে যে, আমিও এই তরুণ দলেরই একজন। এবারের নির্বাচনে তরুণদের কর্মসংস্থানের বিষয়টিকে বিবেচনায় আনায় নতুন ভোটাররা নির্বাচনের প্রতি আরো বেশি আগ্রহী হবে বলে আশা করা যায়। তাই রাষ্ট্রের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি চাই যাতে সাংবিধানিক সব নিয়মনীতি মেনেই নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হোক। এক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক সংগঠন, দল কিংবা প্রার্থীকে অগ্রাধিকার না দিয়ে রাষ্ট্রের সমৃদ্ধিকেই বড় করে দেখা উচিত। আর সেজন্য রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নে যোগ্য থেকে যোগ্যতর দলই কাম্য।
আফসানা ইসলাম
বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ
একজন তরুণ ভোটার হিসেবে আমার প্রথম চাওয়া হবে একটি সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। একটু পরিচ্ছন্ন নির্বাচনের মাধ্যমে এমন সরকার আসুক যে বাংলাদেশকে করবে উন্নত থেকে আরো উন্নততর। এছাড়াও সব রকমের রাজনৈতিক অহিংসতা, মারামারি ও হানাহানি বাদ দিয়ে জনসাধারণের জন্য নিরাপদ ও শান্তি বিবেচনা করে সুষ্ঠ আইন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাষ্ট্র গড়বে।
মুন্নি আক্তার
আইন বিভাগ, গণ বিশ্ববিদ্যালয়
আমরা তরুণরা এদেশের প্রচলিত রাজনৈতিক আচরণের পরিবর্তন চাই। রাজনীতিবিদরা একজন আরেক জনের মুখ দেখবে না এমন রাজনীতি চাই না। বরং যারা সরকার বা বিরোধীদলীয় মানসিকতার বাহিরে গিয়ে এক সাথে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার মানসিকতা রাখবে; আমরা তাদেরকেই বেছে নেব আগামীদিনের নেতা হিসেবে। যেহেতু তরুণদের অধিকাংশই এখন ভোট দেবে; তাই পূর্ণ আস্থা এবং সাহস পাচ্ছি এই ভেবে যে- এদেশের ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন সবকিছুর নেতৃত্বে ছিল এদেশের তরুণরা।
জাহিদুল ইসলাম
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
আমি একটি স্বচ্ছ, অবাধ এবং হানাহানি মুক্ত নির্বাচন দেখতে চাই। সকল রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থী নিয়ম এর মধ্যে থেকে প্রচার প্রচারণা চালাতে পারবে এবং ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবে। জনগণ শুধু মার্কা না দেখে যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেবে; যারা জয়ী হওয়ার পর পরবর্তী ৫ বছরের জন্য এলাকার মানুষদের পাশে থাকবেন
সাম্প্রতিক মন্তব্য